সাম্রাজ্য বিস্তার ও শাসন: (ষষ্ঠ শ্রেণীর ইতিহাস):


দু-এককথায় উত্তর দাও:

১. সম্রাট অশোক কবে সিংহাসনে আরোহণ করেন?
উঃ- খ্রিস্টপূর্ব ২৭৩ অব্দে।

২. মগধ সাম্রাজ্যের প্রতিষ্ঠাতা কে?
উঃ- বিম্বিসার।

৩. ‘কুনিক’ উপাধি কে গ্রহণ করেন?
উঃ- অজাতশত্রু।

৪. চন্দ্রগুপ্ত মৌর্য নন্দ বংশকে ধ্বংস করতে কোন বিদেশি শাসকের শরণাপন্ন হয়?
উঃ- আলেকজান্ডার।

৫. অশোক স্তম্ভটি কোথায় আবিষ্কৃত হয়েছে?
উঃ- সারনাথে।

৬. ‘অমিত্রঘাত’ উপাধি কে গ্রহণ করেন?
উঃ- সম্রাট বিন্দুসার।

৭. আলেকজান্ডার করে ভারতবর্ষ আক্রমণ করেন?
উঃ- ৩২৭ খ্রিস্টাব্দে।

৮. সেলুকাস কে ছিলেন?
উঃ- আলেকজান্ডারের সেনাপতি।

৯. মেগাস্থিনিস কে ছিলেন?
উঃ- সেলুকাসের দূত, যিনি চন্দ্রগুপ্ত মৌর্যের রাজদরবারে আসেন।

১০. ইন্ডিকা গ্রন্থটি কার লেখা?
উঃ- মেগাস্থিনিসের।

১১. ভারতীয় উপমহাদেশে প্রথম সাম্রাজ্য কোনটি?
উঃ- মগধ সাম্রাজ্য।

১২. অশোক কবে কলিঙ্গরাজ্য আক্রমণ করেন?
উঃ- খ্রিস্টপূর্ব ২৬১ অব্দে।

১৩. ভারতের জাতীয় প্রতীক কী?
উঃ- অশোক চক্র।

১৪. পাটলিপুত্রের বর্তমান নাম কী?
উঃ- পাটনা।

১৫. মহাস্থানগড় কী?
উঃ- বর্তমান বাংলাদেশের বগুড়া জেলার একটি প্রত্নস্থল।

১৬. হাতিগুম্ফা শিলালেখ কে উৎকীর্ণ করেন?
উঃ- কলিঙ্গরাজ খারবেল।

১৭. মৌর্য সাম্রাজ্যের প্রথম রাজা কে ছিলেন?
উঃ- চন্দ্রগুপ্ত মৌর্য।

১৮. খারবেল কে ছিলেন?
উঃ- কলিঙ্গর শ্রেষ্ঠ শাসক।

১৯. কুষাণরা কোন জাতির বংশধর?
উঃ- ইউ-চি গোষ্ঠীর।

২০. কুষাণ বংশের প্রথম রাজা কে ছিলেন?
উঃ- প্রথম কদফিসেস।

২১. কে ভারতের প্রথম ঐতিহাসিক সম্রাট?
উঃ- চন্দ্রগুপ্ত মৌর্য ।

২২. কুষাণ বংশের শ্রেষ্ঠ রাজা কে ছিলেন?
উঃ- প্রথম কনিষ্ক।

২৩. কনিষ্কের রাজধানী কোথায় ছিল?
উঃ- পুরুষপুর।

২৪. ভারতের দ্বিতীয় অশোক কাকে বলা হয়?
উঃ- প্রথম কনিষ্ককে।

২৫. কনিষ্ক কত খ্রিস্টাব্দে সিংহাসনে বসেন?
উঃ- ৭৮ খ্রিস্টাব্দে।

২৬. এজেসিলাস কে ছিলেন?
উঃ- কনিষ্কের রাজদরবারের গ্রিক স্থপতি।

২৭. কনিষ্ক যে-অব্দের প্রচলন করেন তার নাম কী?
উঃ- শকাব্দ।

২৮. সাতবাহন রাজ্যের প্রতিষ্ঠাতা বা প্রথম শাসক কে ছিলেন?
উঃ- সিমুক।

২৯. সাতবাহন রাজ্যের শ্রেষ্ঠ শাসক কে ছিলেন?
উঃ- গৌতমীপুত্র সাতকর্ণি।

৩০. কুষাণ যুগে প্রাদেশিক শাসনকর্তাদের কী বলা হত?
উঃ- ক্ষত্রপ।

৩১. ‘শ্রেণিক’ উপাধি কে ধারণ করেছিলেন?
উঃ- বিম্বিসার।

৩২. ‘ত্রি-সমুদ্র-তোয়া-পীতবাহন’ উপাধি কে ধারণ করেন?
উঃ- গৌতমীপুত্র সাতকর্ণি।

৩৩. গুপ্ত বংশের প্রতিষ্ঠাতা কে?
উঃ- শ্রীগুপ্ত।

৩৪. গুপ্ত বংশের প্রকৃত প্রতিষ্ঠাতা কে?
উঃ- প্রথম চন্দ্রগুপ্ত।

৩৫. কোন বছর থেকে গুপ্তা চালু হয়?
উঃ- ৩২০ খ্রিস্টাব্দ থেকে।

৩৬. প্রথম গুপ্তাব্দ কে চালু করেন?
উঃ- প্রথম চন্দ্রগুপ্ত।

৩৭. সমুদ্রগুপ্ত কত খ্রিস্টাব্দে সিংহাসনে বসেন?
উঃ- ৩৩৫ খ্রিস্টাব্দে।

৩৮. ‘লিচ্ছবি দৌহিত্র’ কাকে বলা হয়?
উঃ- সমুদ্রগুপ্তকে।

৩৯. অশোক স্তম্ভটি কবে ভারতের জাতীয় প্রতীক হিসেবে গৃহীত হয়?
উঃ- ১৯৫০ খ্রিস্টাব্দের ২৬ জানুয়ারি।

৪০. মৌর্য বংশের শ্রেষ্ঠ রাজা কে ছিলেন
উঃ- সম্রাট অশোক।

৪১. ‘মহেশ্বর’ উপাধি কে ধারণ করেন ?
উঃ- বিম কদফিসেস।

৪২. ধম্ম কথাটি অশোক কোন্ লেখতে ব্যবহার করেন?
উঃ- মাস্কি লেখতে।

৪৩. এলাহাবাদ প্রশস্তিতে উল্লেখিত 'দৈবপুত্র-শাহি-শাহানুশাহি’ কোন্ রাজ্যকে বোঝায়?
উঃ- উত্তর-পশ্চিম কুষাণ রাজ্যকে।

৪৪. এলাহাবাদ প্রশস্তির রচনাকার কে?
উঃ- হরিষেণ (সমুদ্রগুপ্তের সভাপতি)।

৪৫. 'ভারতের নেপোলিয়ন’ কাকে বলা হয়?
উঃ- সমুদ্রগুপ্তকে।

৪৬. প্রাচীন ভারতের 'সুবর্ণ যুগের অগ্রদূত’ কাকে বলা হয়?
উঃ- সমুদ্রগুপ্তকে।

৪৭. মগধের রাজধানী কোথায় ছিল?
উঃ- পাটলিপুত্র।

৪৮. সমুদ্রগুপ্তের মাতার নাম কী?
উঃ- কুমারদেবী।

৪৯. দ্বিতীয় চন্দ্রগুপ্ত কত খ্রিস্টাব্দে সিংহাসনে আরোহণ করেন?
উঃ- ৩৭৬ খ্রিস্টাব্দে।

৫০. দ্বিতীয় চন্দ্রগুপ্তের রাজত্বকালে কোন চিনা পর্যটক ভারতে আসেন?
উঃ- ফাহিয়েন।

৫১. কোন গুপ্ত সম্রাটকে ভারতের রক্ষাকারী’ বলা হয়?
উঃ- সম্রাট স্কন্দগুপ্তকে।

৫২. ভারতের মেকিয়াভেলি বলা হয় কাকে?
উঃ- কৌটিল্যকে।

৫৩. ভারতের 'অ্যাটিলা’ বলা হয় কাকে?
উঃ- মিহিরকুলকে।

৫৪. ফা-হিয়েনের ভারত বিষয়ক ভ্রমণ বৃত্তান্তটির নাম কী?
উঃ- ফো-কুয়ো-কি।

৫৫. ‘দেবানংপিয়’ বা প্রিয়দর্শী উপাধি কে গ্রহণ করেন?

উঃ- সম্রাট অশোক।

৫৬. দ্বিতীয় চন্দ্রগুপ্তকে ‘শকারি’ বলা হয় কেন?

উঃ- তিনি শকরাজ তৃতীয় রুদ্রদামনকে পরাজিত করেছিলেন।

৫৭. 'বিক্রমসঙ্গং’-এর প্রবর্তক কে?
উঃ- দ্বিতীয় চন্দ্রগুপ্ত।

৫৮. দ্বিতীয় চন্দ্রগুপ্ত উপাধি ধারণ করেন?
উঃ- বিক্রমাদিত্য।

৫৯. কোন গুপ্তরাঞ্জ ‘পরম ভাগ’ উপাধি গ্রহণ করেন?
উঃ- দ্বিতীয় চন্দ্রগুপ্ত।

৬০. বীরসেন কে ছিলেন?
উঃ- দ্বিতীয় চন্দ্রগুপ্তের মন্ত্রী।

৬১. মহাকবি কালিদাস কোন গুপ্তসম্রাটের রাজসভা অলংকৃত করেছিলেন?
উঃ- দ্বিতীয় চন্দ্রগুপ্তের।

৬২. নালন্দা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতা কে ছিলেন?
উঃ- প্রথম কুমারগুপ্ত।

৬৩. ‘হর্ষচরিত' কে রচনা করেন ?
উঃ- হর্ষবর্ধনের সভাকবি বাণভট্ট ।

৬৪. গুপ্ত বংশের শেষ নৃপতি কে ছিলেন?
উঃ- জীবিতগুপ্ত।

৬৫. নন্দবংশের প্রতিষ্ঠাতা কে?
উঃ- মহাপদ্মনন্দ।

৬৬. অর্থশাস্ত্র কার লেখা?
উঃ- কৌটিল্যের।

৬৭. পুষ্যভূতি বংশের রাজাদের রাজধানী কোথায় ছিল?
উঃ- থানেশ্বরে।

৬৮. কৌটিল্যের প্রকৃত নাম কী?
উঃ- বিষ্ণুগুপ্ত।

৬৯. ‘মানবজাতির প্রথম ধর্মগুরু' কাকে বলা হয়?
উঃ- সম্রাট অশোককে।

৭০. ভদ্রশালক কে ছিলেন?
উঃ- ধননন্দের সেনাপতি।

৭১. হর্ষবর্ধন কী উপাধি গ্রহণ করেন ?
উঃ- শিলাদিত্য।

৭২. মৈত্ৰক বংশের শ্রেষ্ঠ রাজা কে ছিলেন?
উঃ- দ্বিতীয় ধ্রুবসেন।

৭৩. দ্বিতীয় রুদ্রসেন কে ছিলেন?
উঃ- বাকাটক বংশীয় রাজা।

৭৪. কোন সময় হিউয়েন সাঙ ভারতে আসেন?
উঃ-  ৬৩০ খ্রিস্টাব্দে।

৭৫. মৌখরি বংশ ভারতের কোথায় রাজত্ব করত?
উঃ- কনৌজে।

৭৬. গ্রহবর্মন কে ছিলেন?
উঃ- মৌখুরি বংশের শেষ স্বাধীন রাজা।

৭৭. হর্ষবর্ধন কত খ্রিস্টাব্দে সিংহাসনে বসেন?
উঃ- ৬০৬ খ্রিস্টাব্দে।

৭৮. ‘হর্ষাব্দ’ বা ‘হর্ষসম্বৎ’ কবে চালু হয়?
উঃ- ৬০৬ খ্রিস্টাব্দে।

৭৯. শশাঙ্কের প্রকৃত নাম কী ছিল?
উঃ- নরেন্দ্রাদিত্য।

৮০. দক্ষিণ ভারতের যে-রাজার কাছে হর্ষবর্ধন পরাজিত হন তাঁর নাম কী?
উঃ- চালুক্যরাজ দ্বিতীয় পুলকেশি।

৮১. শশাঙ্কের রাজধানী কোথায় ছিল?
উঃ- কর্ণসুবর্ণে।

৮২. হর্ষবর্ধনের রাজত্বকালে কোন্ চিনা পর্যটক ভারতে আসেন?
উঃ- হিউয়েন সাঙ।

৮৩. ‘ভরতবর্ষ' বা ভারতবর্ষ নামটি কোন লেখতে উল্লেখিত হয়েছে?
উঃ- হাতিগুম্ফা শিলালেখতে।

৮৪. মৌর্যরাজ বংশের পূর্বে মগধে কোন্ রাজবংশ রাজত্ব  করত?
উঃ- নন্দ রাজবংশ।

(২ নম্বরের প্রশ্ন ও উত্তর)
১. ভারতের রক্ষাকারী কাকে, কেন বলা হয়?
উঃ- স্কন্দগুপ্তকে ভারতের রক্ষাকারী বলা হয়। তিনি সিংহাসনে বসে অল্পদিনের মধ্যে বীরত্বের সঙ্গে যুদ্ধ করে হুনদের পরাজিত করে গুপ্ত সাম্রাজ্যকে এক চরম বিপদের হাত থেকে রক্ষা করেন। তাই ঐতিহাসিক রমেশচন্দ্র মজুমদার তাঁকে ভারতের রক্ষাকর্তা বা রক্ষাকারী বলেছেন।

২. সাম্রাজ্য বলতে কী বোঝো?
উঃ- সাম্রাজ্য হল একটি বড়ো অঞ্চল বা রাজ্য। একটি রাজ্যে কয়েক হাজার জনগণ বাস করে। যুদ্ধের মধ্যদিয়ে রাজ্য জয় করে রাজারা তাদের অঞ্চল বা রাজ্য বৃহৎ করে। এই বৃহৎ অঞ্চল বা রাজ্যকে বলে সাম্রাজ্য।

৩. কীভাবে রাজা সম্রাট হতেন?
উঃ- একজন রাজা যুদ্ধের মাধ্যমে কতকগুলি রাজ্য দখল করে একটি সাম্রাজ্য তৈরি করেন। সেই রাজা যজ্ঞ করে একটি বিরাট উপাধি নিতেন। নিজের শক্তির প্রমাণ দেখিয়ে তিনি হতেন সম্রাট।

৪. সাম্রাজ্যের কয়েকটি বৈশিষ্ট্য উল্লেখ করো।
উঃ-  অনেকগুলি রাজ্য মিলে সাম্রাজ্য সৃষ্টি হয়। সাম্রাজ্যের কয়েকটি বৈশিষ্ট্য হল-
(ক) অনেকগুলি রাজ্য নিয়ে একটি সাম্রাজ্য গড়ে ওঠে।
(খ) সাম্রাজ্যের আয়তন বৃহৎ হয়।
(গ) নানা ভাষাভাষী মানুষ, জাতিধর্ম-বর্ণের মানুষজনদের নিয়ে সাম্রাজ্য গড়ে ওঠে।

৫. আলেকজান্ডারের অভিযানের ফল কী হয়েছিল?
উঃ-  আলেকজান্ডারের অভিযানের ফলে ভারতীয় উপমহাদেশের উত্তরে ছোটো শক্তিগুলির ক্ষমতা কমে গিয়েছিল। ফলে মৌর্যবংশের উত্থানের পথ সুগম হয়েছিল।

৬. মগধ মহাজনপদটির অবস্থান কোথায়?
উঃ-  মগধ রাজ্যটি উত্তর ভারতের গঙ্গা, শোন ও গণ্ডক নদী বিধৌত সমভূমিতে অবস্থিত ছিল। প্রথমে এর রাজধানী ছিল রাজগৃহ। পরে তা হয় পাটলিপুত্র (বর্তমান পাটনা)।

৭. মগধ রাজ্যের প্রথম রাজা কে ছিলেন? তিনি কত খ্রিস্টপূর্বাব্দে সিংহাসনে বসেন?
উঃ- মগধ রাজ্যের প্রথম রাজা ছিলেন বিম্বিসার। তিনি ৫৪৫ খ্রিস্টপূর্বাব্দে সিংহাসনে আরোহণ করেন।

৮. বিম্বিসারের বৈবাহিক সম্পর্ক স্থাপন নীতির পরিচয় দাও।
উঃ-  মগধের সুরক্ষা তথা মগধকে শত্রুমুক্ত করতে বিম্বিসার পার্শ্ববর্তী রাজ্যগুলির সঙ্গে বৈবাহিক সম্পর্ক স্থাপন করেন। যেমন- তিনি কোশল রাজকন্যা কোশলদেবী, লিচ্ছবি রাজকন্যা চেল্লনা, মদ্ররাজ কন্যা ক্ষেমাদেবী এবং বিদেহ রাজকন্যা বাসবীকে বিবাহ করেন।

৯. অজাতশত্রু কে ছিলেন? তিনি কী উপাধি ধারণ করেন?
উঃ- অজাতশত্রু ছিলেন মগধের রাজা বিম্বিসারের পুত্র। তিনি ৪৯৩ খ্রিস্টপূর্বাব্দে মগধাধিপতি হন। তিনি কুনিক উপাধি ধারণ করেন।

১০. হর্ষঙ্ক বংশের শেষ রাজা কে ছিলেন? তাঁর পর কে মগধের রাজা হন?
উঃ- হর্ষঙ্ক বংশের শেষ রাজা ছিলেন নাগদাস। তাঁকে পরাজিত করে ৪৩০ খ্রিস্টপূর্বাব্দে মগধের রাজা হন শিশুনাগ।

১১. মৌর্য সেনাবাহিনীর গঠন কেমন ছিল?
উঃ- মৌর্য সেনাবাহিনীতে সম্রাটের ক্ষমতাই ছিল সবচাইতে বেশি। ঘোড়া, রথ, হাতি, নৌকা প্রভৃতি নিয়ে এই সেনাবাহিনী গঠিত ছিল। পদাতিক সৈন্যরাও এই বাহিনীতে ছিল।

১২. কলিঙ্গ রাজ্যটির অবস্থান নির্দেশ করো। মৌর্য যুগে কলিঙ্গের রাজধানীর নাম কোথায় ছিল?
উঃ- অশোক যখন কলিঙ্গ আক্রমণ করেন সেই সময় কলিঙ্গ রাজ্যটি পূর্বে সুবর্ণরেখা নদী থেকে দক্ষিণে নর্মদা নদীর তীর পর্যন্ত বিস্তৃত ছিল। সেই সময় কলিঙ্গের রাজধানীর নাম ছিল তোষালি।

১৩. মৌর্য বংশের প্রতিষ্ঠাতা কে ছিলেন? তিনি কত দিন রাজত্ব করেন?
উঃ- মৌর্যবংশের প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন চন্দ্রগুপ্ত মৌর্য। তিনি খ্রিস্টপূর্ব ৩২৪-৩০০ খ্রিস্টপূর্বাব্দ পর্যন্ত রাজত্ব করেন।

১৪. চন্দ্রগুপ্তের রাজ্যসীমা বর্ণনা করো।
উঃ- চন্দ্রগুপ্তের বাহুবলে মৌর্য সাম্রাজ্যের সীমানা বহুদূর পর্যন্ত বিস্তৃত ছিল। তাঁর সাম্রাজ্য পূর্বে বাংলাদেশ থেকে উত্তর-পশ্চিমে সৌরাষ্ট্র ও হিন্দুকুশ পর্বতমালা পর্যন্ত এবং উত্তরে হিমালয় থেকে দক্ষিণে তিনেভেলি পর্যন্ত বিস্তৃত ছিল।

১৫. গঙ্গারিদাই কী?
উঃ- গ্রিক ও রোমান সাহিত্য থেকে মগধের পূর্বদিকের এক শক্তিশালী রাজ্যের কথা জানা গেছে। সেই রাজ্যকে গঙ্গারিদ বা গঙ্গারিদাই বলা হত।

১৬. কাকে, কেন ভারতের প্রথম ঐতিহাসিক সম্রাট বলা হয়?
উঃ- ঐতিহাসিক হেমচন্দ্র রায়চৌধুরী ও রাধাকুমুদ মুখোপাধ্যায় চন্দ্রগুপ্ত মৌর্যাকে ভারতের প্রথম ঐতিহাসিক সম্রাট বলেছেন। কারণ তাঁরই হাত ধরে ভারতের প্রথম রাষ্ট্রীয় ঐক্যের পথ প্রশস্ত হয়।

১৭. মৌর্য বংশের শ্রেষ্ঠ সম্রাট কে ছিলেন? তিনি কত বছর রাজত্ব করেন?
উঃ- মৌর্য বংশের শ্রেষ্ঠ সম্রাট ছিলেন অশোক। তিনি খ্রিস্টপূর্ব ২৭৩-২৩২ খ্রিস্টপূর্বাব্দ পর্যন্ত রাজত্ব করেন।

১৮. সম্রাট অশোক কবে কলিঙ্গ রাজ্য আক্রমণ করেন? এই সময় ওই রাজ্যটি কোথায় অবস্থিত ছিল?
উঃ- ২৬১ খ্রিস্টপূর্বাব্দে সম্রাট অশোক কলিঙ্গ আক্রমণ করেন। এই সময় কলিঙ্গ রাজ্যটি পূর্বে সুবর্ণরেখা নদী থেকে দক্ষিণে নর্মদা নদী পর্যন্ত বিস্তৃত ছিল।

১৯. সম্রাট অশোকের সাম্রাজ্যের সীমানা নির্দেশকারী দুটি প্রধান পর্বতলিপির নাম করো।
উঃ- সম্রাট অশোকের সাম্রাজ্যের সীমানা নির্দেশকারী দুটি প্রধান পর্বতলিপির নাম হল গিরনার লিপি (গুজরাট) ও সোপারা লিপি (মহারাষ্ট্র)।

২০. সম্রাট অশোকের সাম্রাজ্যের সীমানা নির্দেশ করো ।
উঃ- সম্রাট অশোকের সাম্রাজ্য উত্তরে আফগানিস্তান, সিন্ধুদেশ ও নেপাল থেকে শুরু করে দক্ষিণে পেল্লার নদী এবং পশ্চিমে সৌরাষ্ট্র থেকে শুরু করে বঙ্গদেশ পর্যন্ত বিস্তৃত ছিল।

২১. সম্রাট অশোক ধর্মমহামাত্র’নামক এক নতুন রাজকর্মচারী নিয়োগ করেন। এঁদের কাজ কী ছিল?
উঃ- ধর্মমহামাত্রদের কাজ ছিল—
(ক) গৌতমবুদ্ধের বাণী প্রচার করা।
(খ) সাম্রাজ্যে বসবাসকারী বিভিন্ন সম্প্রদায়ের মধ্যে সাতি গড়ে তোলা।
(গ) প্রজারা যাতে শান্তিতে জীবনযাপন করে।
(ঘ) নির্বিরে ধর্মাচরণ করতে পারে সেদিকে নজর দেওয়া।

২২. কত খ্রিস্টাব্দে, কোথায় তৃতীয় বৌদ্ধসংগীতি আহূত হয়?
উঃ- ২৫১ খ্রিস্টপূর্বাব্দে সম্রাট অশোকের রাজত্বকালে পাটলিপুত্রে তৃতীয় বৌদ্ধসংগীতি তাহৃত হয়।

২৩. সম্রাট অশোকের ধর্মবিজয় নীতি’বলতে কী বোঝো?
উঃ- কলিঙ্গ যুদ্ধের তাণ্ডবলীলা ও মানুষের মৃত্যু দেখে সম্রাট অশোক আনুশোচনায় দগ্ধ হন। এরপর তিনি বৌদ্ধধর্ম এবং শান্তিবাদী নীতি গ্রহণ করেন। তিনি মনে করেছিলেন একমাত্র ভালোবাসার দ্বারাই মানুষের মন জয়লাভ করা যায়। যুদ্ধ দ্বারা নয়। সেজন্য তিনি ২৫১ খ্রিস্টপূর্বাব্দের পর ধর্মবিজয়’ নীতি গ্রহণ করেন।

২৪. কলিঙ্গ যুদ্ধের পর সম্রাট অশোকের মধ্যে কীরূপ পরিবর্তন হয়েছিল?
উঃ- কলিঙ্গ যুদ্ধের নারকীয় হত্যালীলা, স্বজনহারা মানুষের কান্না, আর রক্তের স্রোত দেখে অশোকের মনে গভীর রেখাপাত করে। তিনি তার এই কাজের জন্য অনুতপ্ত হন। এরপর তিনি শান্তিবাদী বৌদ্ধধর্ম গ্রহণ করেন এবং যুদ্ধ বিজয়নীতি ত্যাগ করে জনকল্যাণমূলক কর্মে নিজেকে আত্মনিয়োগ করেন। তিনি তার অবশিষ্ট জীবন কাটিয়ে দেন জনসেবার ব্রত নিয়ে।

২৫. সম্রাট অশোক ‘ধম্ম কথাটি প্রথম কোথায় বা কোন্ লিপিতে ব্যবহার করেন ? তাঁর ধর্মের আচরণবিধি উল্লেখিত আছে এমন দুটি লেখ-র নাম করো।
উঃ- সম্রাট অশোক ‘ধম্ম কথাটি প্রথম ‘মাস্কি লেখতে ব্যবহার করেন। দ্বিতীয় ও সপ্তম স্তম্ভ লেখতে তার ধর্মের আচরণবিধি উল্লেখিত আছে।

২৬. সম্রাট অশোকের ‘ভেরি ঘোষ নীতি’ কী?
উঃ- সিংহাসনে বসার অষ্টম বছরে সম্রাট অশোক কলিঙ্গ অভিযান করেন। তাঁর এই যুদ্ধবাদী তথা যুদ্ধবিজয় নীতিকেই বলা হয় ‘ভেরি ঘোষ নীতি'।

২৭. সম্রাট অশোক যে-পশুপ্রেমী ছিলেন তা বোঝা যায় কীভাবে?
উঃ- সম্রাট অশোকের দুটি রাজকীয় ঘোষণা প্রমাণ করে যে, তিনি একজন পশুদি সম্রাট ছিলেন। যেমন তিনি ঘোষণা করেন-
(ক) অনারম্ভ প্রাণনাম’ অর্থাৎ প্রাণী হত্যা না-করা।
(খ) অবিহিশ ভূতানাম অর্থাৎ, জীবিত প্রাণীর ক্ষতি না করা।
(গ) এ ছাড়া তিনি পশুদের চিকিৎসার জন্য পশু চিকিৎসালয় প্রতিষ্ঠা করেছিলেন।

২৮. মৌর্য শাসনযন্ত্রের সমাহর্তা এবং সন্নিধাতাদের কাজ কী ছিল?
উঃ- মৌর্য শাসনব্যবস্থায় সমাহর্তাদের কাজ ছিল রাজস্ব বিভাগ দেখাশোনা করা। আর সন্নিধাতারা ছিলেন রাজকোশের প্রতিমন্ত্রী।

২৯. মৌর্য শাসনব্যবস্থায় ‘অ্যাগ্রোনময় ও অস্টিনময়’ কারা ছিলেন?
উঃ- মেগাস্থিনিসের ইন্ডিকা গ্রন্থ অনুসারে জেলাশাসকদের বলা হত ‘অ্যাগ্রোনময়’এবং পৌর প্রশাসকদের বলা হত ‘অস্টিনময়।

৩০. মৌর্য বংশের শেষ শাসক কে ছিলেন? তাঁকে কে পরাজিত করেন?
উঃ- মৌর্য বংশের শেষ সম্রাট ছিলেন বৃহদ্রথ। ১৮৭ খ্রিস্টপূর্বাব্দে বৃহদ্রথকে হত্যা করে পুষ্যমিত্র শুঙ্গ মগধ দখল করেন।

৩১. মৌর্যদের পর মগধ শাসন করেছিল এরূপ দুটি রাজবংশের নাম উল্লেখ করো।
উঃ- মৌর্যদের পর মগধ শাসন করেছিল এরূপ দুটি রাজবংশ হল যথাক্রমে শুঙ্গবংশ ও কাম্ব বংশ।

৩২. মৌর্য সাম্রাজ্য পতনের দুটি কারণ উল্লেখ করো।
উঃ- মৌর্য সাম্রাজ্যের পতনের কারণ—
(ক) অহিংসনীতি: সম্রাট অশোকের অহিংসনীতি গ্রহণ এবং যুদ্ধ বিজয় নীতি পরিত্যাগ করার ফলে মৌর্য সেনাবাহিনী দুর্বল হয়ে পড়ে।
(খ) শক্তিশালী সম্রাটের অভাব: অশোকের পর মৌর্য বংশে তেমন শক্তিশালী নরপতির আর্বিভাব ঘটেনি। ফলে মৌর্য সাম্রাজ্যের প্রশাসন ব্যবস্থা দুর্বল হয়ে পড়ে।

৩৩. কনিষ্ককে কেন ‘দ্বিতীয় অশোক’ বলা হয়?
উঃ- সম্রাট অশোক যেমন বৌদ্ধধর্ম প্রচার করেন এবং বৌদ্ধ স্থূপ-চৈত্য নির্মাণ করেন তেমনি কুষাণরাজ কনিষ্ক অশোকের পদাঙ্ক অনুসরণ করেন। অশোকের মতো তিনিও তাঁর রাজধানীতে বৌদ্ধসংগীতির আয়োজন করেন। সেজন্য ঐতিহাসিক ভিনসেন্ট স্মিথ তাঁকে ‘দ্বিতীয় অশোক’ বলে অভিহিত করেছেন।

৩৪. ভারতের রাজত্বকারী কুষাণ কারা? বা তাদের পরিচয় কী?
উঃ- মধ্য এশিয়ার ইউ-চি নামক এক যাযাবর জাতির পাঁচটি শাখা ছিল। ওই শাখাগুলির মধ্যে অন্যতম ছিল কু এই যুয়াং। ভারতে রাজত্বকারী কুণরা ছিল কু এই যুয়াং জাতির বংশধর।

৩৫. কুষাণ বংশের প্রথম রাজা কে? তিনি কখন রাজত্ব করেন?
উঃ- কুষাণ বংশের প্রথম রাজা ছিলেন প্রথম কদফিসেস। তিনি খ্রিস্টপূর্ব ১৫ থেকে ৬৫ অব্দ পর্যন্ত রাজত্ব করেন।

৩৬. কনিষ্কের রাজ্যসীমানা কতদূর পর্যন্ত বিস্তৃত ছিল?
উঃ- কনিষ্কের সাম্রাজ্য উত্তরে কাশ্মীর থেকে দক্ষিণে বিন্ধ্যপর্বত এবং পশ্চিমে সিন্ধু নদ থেকে পূর্বে বিহার পর্যন্ত বিস্তৃত ছিল।

৩৭. কত খ্রিস্টাব্দে, কার আমলে এবং কোথায় চতুর্থ বৌদ্ধসংগীতি আহূত হয়?
উঃ- ১১৮ খ্রিস্টাব্দে সম্রাট কনিষ্কের আমলে পুরুষপুরে (বা জলন্ধর) চতুর্থ ‘বৌদ্ধসংগীতি’ আহূত হয়।

৩৮. কুষাণ সম্রাটরা কেন নিজেদের ‘দেবতার পুত্র’ বলতেন?
উঃ- একসময় সম্রাটরা নিজেদের দেবতার পুত্র’ বলতেন। হয়তো সে-কারণেই কুষাণরা নিজেদের ‘দেবপুত্র’অর্থাৎ ‘দেবতার পুত্র’ বলে ঘোষণা করতেন।

৩৯. কে, কবে, কাদের পরাজিত করে ভারতে সাতবাহন সাম্রাজ্যের পত্তন করেন?
উঃ- আনুমানিক খ্রিস্টপূর্ব ৩০ অব্দে সিমুক নামক এক ব্যক্তি কাম্বদের পরাজিত করে মহারাষ্ট্রে সাতবাহন সাম্রাজ্যের পত্তন করেন।

৪০. গুপ্ত বংশের প্রতিষ্ঠাতা কে? এই বংশের প্রকৃত প্রতিষ্ঠাতা কে?
উঃ- গুপ্ত বংশের প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন শ্রীগুপ্ত। এই বংশের প্রকৃত প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন প্রথম চন্দ্রগুপ্ত।

৪১. সমুদ্রগুপ্তকে 'লিচ্ছবি দৌহিত্র’ বলার কারণ কী?
উঃ- সমুদ্রগুপ্তের পিতা প্রথম চন্দ্রগুপ্ত বৈশালীর লিচ্ছবি বংশীয় রাজকন্যা কুমারদেবীকে বিবাহ করেন। সমুদ্রগুপ্ত কুমারদেবীর সন্তান ছিলেন। তাই ঐতিহাসিকগণ তাকে 'লিছবি দৌহিত্র’ উপাধিতে ভূষিত করেছেন।

৪২. কবে থেকে গুপ্তাব্দ গণনা শুরু হয়?
উঃ- প্রথম গুপ্তসটি প্রথম চন্দ্রগুপ্তের রাজা হওয়ার সময় থেকে তার্থাৎ ৩১৯-৩২০ খ্রিস্টাব্দ থেকে গুপ্তাব্দের প্রচলন হয়।

৪৩. সমুদ্রগুপ্তের ‘গ্রহণ’, ‘মোক্ষ’ ও ‘অনুগ্রহ নীতি বলতে কী বোঝো?
উঃ- সমুদ্রগুপ্ত দক্ষিণ ভারতের ১২ টি রাজ্য জয়ের ক্ষেত্রে গ্রহণ, মোক্ষ ও অনুগ্রহ নীতি গ্রহণ করেন। গ্রহণ নীতি দ্বারা কিছু রাজ্য প্রত্যক্ষ শাসনাধীনে নিয়ে আসেন। মোক্ষ নীতি দ্বারা কিছু রাজ্যকে তিনি করদ রাজ্যে পরিণত করেন। এবং অনুগ্রহ নীতি দ্বারা কিছু রাজ্যের বশ্যতা আদায় করে তাঁদের রাজ্য ফিরিয়ে দেন। আসলে দূরদর্শী সমুদ্রগুপ্ত জানতেন সুদূর পাটলিপুত্র থেকে দক্ষিণ ভারতের রাজ্যগুলির ওপর প্রত্যক্ষ নিয়ন্ত্রণ রাখা সম্ভবপর নয়। তাই তিনি এরূপ নীতি গ্রহণ করেন।

৪৪. যেসমস্ত সীমান্তবর্তী রাজ্যগুলি (গুপ্ত সাম্রাজ্যের) সমুদ্রগুপ্তের বশ্যতা স্বীকার করে তাদের নাম উল্লেখ করো।
উঃ- সমুদ্রগুপ্তের সাম্রাজ্য বিস্তার নীতিতে ভয় পেয়ে গুপ্ত সাম্রাজ্যের সীমান্তবর্তী যেসমস্ত রাজ্য সমুদ্রগুপ্তের বশ্যতা স্বীকার করে নেয় সেগুলি হল— নেপাল, কর্তৃপুর, সমতট, কামরূপ, ও দভক প্রভৃতি।

৪৫. সুদূর দক্ষিণে সমুদ্রগুপ্ত কতদূর অধিকার প্রতিষ্ঠা করেছিলেন?
উঃ-  সুদূর দক্ষিণে তামিলনাড়ুর উত্তর-পূর্ব অংশ পর্যন্ত সমুদ্রগুপ্তের অধিকার কায়েম হয়েছিল।

৪৬. প্রথম কুমারগুপ্তের শাসনকালের গুরুত্ব কী ছিল?
উঃ- প্রথম কুমারগুপ্তের আমলেও গুপ্ত সাম্রাজ্যের গৌরব অক্ষুন্ন ছিল। তিনি সাম্রাজ্যে নানা ধরনের মুদ্রার প্রচলন করেছিলেন। তাঁর আমলেই নালন্দা মহাবিহার প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল।

৪৭. সমুদ্রগুপ্তের রাজ্যসীমা কীরূপ ছিল?
উঃ- ঐতিহাসিক রাধাকুমুদ মুখোপাধ্যায়ের মতে, সমুদ্রগুপ্তের সাম্রাজ্য পূর্বে ব্রহ্পুত্র উপত্যকা, পশ্চিমে সৌরাষ্ট্র, উত্তরে কাশ্মীর ও হিমালয় পর্বত এবং দক্ষিণে নর্মদা নদী পর্যন্ত বিস্তৃত ছিল।

৪৮. কে, কেন সমুদ্রগুপ্তকে ভারতের নেপোলিয়ন বলেছেন?
উঃ- ঐতিহাসিক ভিনসেন্ট স্মিথ সমুদ্রগুপ্তকে ভারতের নেপোলিয়ন বলেছেন। কারণ নেপোলিয়ন যেমন তাঁর বাহুবলে ইউরোপের বিভিন্ন রাজ্য ফরাসি সাম্রাজ্যের অন্তর্ভুক্ত করেন, তেমনই সমুদ্রগুপ্ত তাঁর প্রতিভা ও বাহুলে ভারতের বহু রাজ্য গুপ্ত সাম্রাজ্যের অন্তর্ভুক্ত

৪৯. কাকে, কেন ‘প্রাচীন ভারতের সুবর্ণযুগের অগ্রদূত বলা হয়?
উঃ-  অনেক ঐতিহাসিক মনে করেন যে, সম্রাট সমুদ্রগুপ্তের আমলে প্রায় গোটা ভারতভূমিতে যে-রাজনৈতিক ঐক্য ও অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল তা গুপ্ত যুগে সূবর্ণযুগের পথ প্রশস্ত করে। সেজন্য তাকে ‘প্রাচীন ভারতের সুবর্ণঠুগের অগ্রদূত’ বলা হয়।

৫০. গ্রহবর্মা কে ছিলেন?
উঃ- গ্রহবর্মা ছিলেন কনৌজের রাজা। তার সঙ্গে পুভূতিরাজ প্রভাকরবর্ধনের মেয়ে রাজ্যশ্রীর বিয়ে হয়েছিল। কলেজ ও মালরে যুদ্ধে তিনি মারা যান।

৫১. কত খ্রিস্টাব্দে,কী উপাধি নিয়ে দ্বিতীয় চন্দ্রগুপ্ত সিংহাসন আরোহণ করেন?
উঃ-  সমুদ্রগুপ্তের মৃত্যুর পর তার পুত্র দ্বিতীয় চন্দ্রগুপ্ত ৩৭৬ খ্রিস্টাব্দে ‘বিক্রমাদিত্য’ উপাধি ধারণ করে মগধের সিংহাসনে বসেন।

৫২. দ্বিতীয় চন্দ্রগুপ্তকে শাকারি’ বলা হয় কেন?
উঃ- দ্বিতীয় চন্দ্রগুপ্তকে শকারি বলা হয়, কারণ তিনি গু পদের দীর্ঘদিনের শত্রু সৌরাষ্ট্রের শকরাজ তৃতীয় দামকে পরাজিত করে গুপ্ত সাম্রাজ্যকে বিপদমুক্ত করেছিলেন।

৫৩. পার্শ্ববর্তী রাজ্যগুলির সঙ্গে দ্বিতীয় চন্দ্রগুপ্তের বৈবাহিক সম্পর্ক স্থাপন নীতির পরিচয় দাও।
উঃ- গুপ্ত সাম্রাজ্যের সংহতি স্থাপন ও শক্তি বৃদ্ধির জন্য দ্বিতীয় চন্দ্রগুপ্ত পার্শ্ববর্তী রাজ্যগুলির সঙ্গে বৈবাহিক সম্পর্ক স্থাপন করেন। মধ্য ভারতের শক্তিশালী নাগবংশীয় রাজকন্যা কুবের নাগকে তিনি বিবাহ করেন এবং নিজের পুত্রের সঙ্গে কুন্তলের কদম্ব বংশীয় রাজকন্যার বিবাহ দেন। এ ছাড়া নিজের কন্যা প্রভাবতীর সঙ্গে নর্মদার দক্ষিণে অবস্থিত বাকাটকরাজ দ্বিতীয় রুদ্রসেনের বিবাহ দেন।

৫৪. কে, কেন ‘বিক্রমসম্বৎ’ প্রবর্তন করেন?
উঃ- ড. আর ভাণ্ডারকরের মতে, দ্বিতীয় চন্দ্রগুপ্ত মালব জয় করার পর ‘বিক্রমসম্বৎ প্রবর্তন করেন।

৫৫. স্কন্দগুপ্তের পর কে মগধের রাজা হন? গুপ্ত বংশের শেষ রাজা কে ছিলেন?
উঃ-  স্কন্দগুপ্তের পর মগধের রাজা হন পুরু গুপ্ত। গুপ্ত বংশের শেষ রাজা ছিলেন জীবিতগুপ্ত।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন for "সাম্রাজ্য বিস্তার ও শাসন: (ষষ্ঠ শ্রেণীর ইতিহাস):"